সাম্প্রতিক খবর

বাণিজ্য
views

রফতানির মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটি খাতকে নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুল তথ্য প্রকাশের এমন ঘটনায় একই সঙ্গে বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

মূলত একটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি থেকে শুরু করে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নির্ধারণ এবং অর্থনৈতিক নানান নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে রফতানি আয়ের প্রকৃত হিসাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

কিন্তু রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসের রফতানি আয়ের হিসেবে বড় ধরনের অসামাঞ্জস্য ধরা পড়েছে।

ফলে দেশটির জিডিপি, মোট জাতীয় উৎপাদন (জিএনপি), বিদেশি বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ঋণ গ্রহণের নীতি লেনদেনের ভারসাম্য-সহ অর্থনীতির অনেক সূচক এবং নীতির যথার্থতা নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

“সব মিলিয়ে এটি দেশের ভাবমূর্তিকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। কাজেই কীভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটলো, সেটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন,” বিবিসি বাংলাকে বলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) অসামাঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে রফতানির প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সেখানে দেখা গেছে যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের প্রকৃত রফতানি ইপিবির দেওয়া তথ্যের চেয়ে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কম ছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন তথ্য প্রকাশের পরে ইপিবিও তাদের রফতানির তথ্য সংশোধন করেছে।

কিন্তু রফতানি বেশি দেখানোর ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, ইপিবির পক্ষ থেকে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বক্তব্য জানানো হয়নি।

তবে বিষয়টিকে একটি ‘ভুল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

তার মতে, রফতানির একই পণ্যের মূল্য দুইবার ধরে হিসেব করার কারণেই তথ্যে অসামাঞ্জস্য দেখা দিয়েছে।

“ইপিবির যেটা ভুল হয়েছে, ইপিজেড থেকে যে (কাপড়) রফতানি হয়, (তখন) তা একবার হিসাবে ধরা হয়। আবার (ওই একই কাপড় দিয়ে পোশাক তৈরির পর) যখন গার্মেন্টস থেকে রফতানি হয়, সেটা আবার ধরা হয়। এখানে ডাবল হিসাব হয়,” রোববার সাংবাদিকদের বলেন মি. রহমান।

মি. রহমান মতে, দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা যখন কাঁচামাল ক্রয় করছে, তখন সেটি রফতানি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কাঁচামালটি দেশেই আরেকটি কারখানায় ব্যবহার হচ্ছে।

সেখানে কাঁচামাল ব্যবহার করে নতুন চূড়ান্ত পণ্য তৈরির পর যখন সেটি বিদেশে যাচ্ছে, তখন কাঁচামালের রফতানির আগের হিসাব বাদ না দিয়েই নতুন করে পণ্যের পুরো মূল্য বিবেচনা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সর্বাধিক দেখা খবর