সাম্প্রতিক খবর

খেলা
views

আমেরিকার ভিসা নীতি নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়ায় এতদিন ধরে এত হইচই, কই ভারতের ভিসা নীতি নিয়ে কাউকে তো কিছু বলতে শুনি না!

ধরমশালায় হিমাচল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের স্টেডিয়ামের মূল প্রবেশপথের বাইরে গজগজ করতে করতে কথাগুলো যিনি বললেন, তিনি বছর তিরিশের একজন যুবক। মাথায় বাংলাদেশের সবুজ ক্রিকেট ক্যাপ দেখে তিনি কোন দলের সমর্থক, চিনে নিতে ভুল হয় না।

তার এই প্রবল উষ্মার কারণ হল, বিশ্বকাপে প্রিয় দলের ম্যাচগুলো দেখবেন বলে তারা প্রায় জনাবিশেক বন্ধু মিলে পাক্কা দু’মাস আগে ভারতের ভিসার আবেদন করেছিলেন। তার কপালে শিকে ছিঁড়লেও বাকি কেউ এখনও ভিসা পাননি, সদলবলে হইচই করতে করতে খেলা দেখার স্বপ্নও মাথায় উঠেছে!

পরে ভিসা পেতে অসুবিধা হতে পারে, এই আশঙ্কায় ওই যুবক নিজের নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না – কারণটা বুঝে আমিও চাপাচাপি করলাম না।

বস্তুত এই ভিসা জটিলতার কারণেই ছবির মতো সুন্দর ধরমশালার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ খেলতে নামতে হচ্ছে প্রায় কোনও সমর্থক ছাড়াই।

শুধু সাধারণ ক্রিকেট-অনুরাগী দর্শকরাই নন, বিশ্বকাপ কভার করার জন্য আইসিসি-র ‘অ্যাক্রিডিটেড’ বাংলাদেশি সাংবাদিকদেরও অনেকেরই একই হাল।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলেও তাদের অনেকেই ভারতের ভিসা পাননি, যারা শেষ মুহুর্তে পেয়েছেন তারা ম্যাচের দিন সকালে কোনও রকমে এসে ধরমশালার কাংড়া এয়ারপোর্টে নামছেন।

বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখবেন বলে যারা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীর ভারতীয় মিশনগুলোতে আবেদন করেছিলেন, তাদের অনেকেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাচ্ছেন ডিসেম্বরে – মানে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যাওয়ারও পরে।

এত বড় মাপের একটা বিশ্ব মানের টুর্নামেন্ট আয়োজন করার পরও প্রতিবেশী বন্ধু দেশের ক্রিকেট সমর্থকদের ভিসা দিতে ভারতের কেন এত টালবাহানা, এটাই বুঝে ইঠতে পারছেন না সে দেশের ক্রিকেট অনুরাগী ও সাংবাদিকরা। আর ঠিক এ কারণেই ধরমশালাতে এ মুহুর্তে প্রবলভাবে আলোচনায় ভারতের এই ভিসা-নীতি।

শুক্রবার ম্যাচের আগে নির্ধারিত সাংবাদিক বৈঠকে বাংলাদেশ দলের কোচ চান্ডিকা হাতুরাসিংহেও জানালেন, মাঠে বাংলাদেশের সমর্থকদের খুবই মিস করবে টিম।

বিবিসির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, “আমাদের দর্শকরা কতটা প্যাশনেট, সবাই জানেন। তারা যে এই অসাধারণ স্টেডিয়ামটায় বসে প্রিয় দলের খেলা দেখতে পারছেন না, তাতে আমাদের খুবই খারাপ লাগছে। কিন্তু কী আর করা যাবে!

অনেকটা এ কারণেই কালকের বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের যাবতীয় ক্রিকেটীয় আলোচনাও আপাতত কিছুটা আড়ালে চলে গেছে – ধরমশালায় এসে পৌঁছনোটাই যে কত বড় ঝক্কি, সেই কথাবার্তাই ফিরছে সবার মুখে মুখে।

তবে পাশাপাশি কালকের ম্যাচের প্রস্তুতিও চলছে পুরো দমে – দুটো টিমই পর পর দুদিন তিন-চার ঘন্টা ধরে টানা নেট প্র্যাকটিসও করেছে বিরতিহীনভাবে ।

বাংলাদেশ টিমে তেমন কোনও ইনজুরির সমস্যা না-থাকলেও সামান্য প্রশ্নচিহ্ন ছিল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান-কে ঘিরে, যেহেতু গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় ওয়ার্ম আপ ম্যাচে তিনি খেলেননি।

তবে গতকাল (বৃহস্পতিবার) আহমেদাবাদ থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে সোজা ধরমশালায় নেমেই তিনি দলের প্র্যাকটিসে যোগ দেন। এদিনও তাকে নেটে ব্যাট-বল দুটোই করতে দেখা গেছে।

ফলে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সাকিবের খেলা নিয়ে এখন আর বিন্দুমাত্র সংশয় নেই।

তবে প্রথম একাদশ চূড়ান্ত করা নিয়ে বাংলাদেশকে এখনও বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতে হচ্ছে।

বিশেষত ওপেনিং স্লটে লিটন দাসের সঙ্গে কে নামবেন – তানজিদ হাসান তামিম নাকি মেহিদি হাসান মিরাজ – সেটা এখনও স্থির করা হয়নি।

সর্বাধিক দেখা খবর